বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২৫ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : টেকনাফের প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে অবৈধভাবে তৈরি করা বহুলতল ভবন সহ সকল স্থাপনার পরিবেশ ছাড়পত্র প্রদানের দাবি জানিয়েছেন সেন্টমার্টিন’স দ্বীপ পরিবেশ ও পর্যটন রক্ষা-উন্নয়ন জোট নামের এক সংগঠণ। একই সঙ্গে এর আগে এ সংক্রান্ত পরিবেশ আইনের মামলা প্রত্যাহার সহ ১৮ দাবি জানানো হয়েছে। এই সংগঠণ সংশ্লিষ্টদের দাবি সেন্টমার্টিন সংশ্লিষ্ট ১৩ সংগঠনের জোট এটি।
সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটকদের যাতায়াত সীমিতকরণ ও পর্যটকদের রাতযাপন নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত না নেয়ার দাবিতে বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচী এবং প্রধান উপদেষ্টা বরাবরে প্রেরিত স্মারকলিপিতে এসব দাবি জানানো হয়েছে।
আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটকদের রাত্রিযাপন নিষিদ্ধ এবং ভ্রমণ সীমিতকরণ হলে পর্যটন শিল্পের সাথে সরাসরি জড়িত তিন লাখের বেশী মানুষের জীবন-জীবিকা ক্ষতির মুখে পড়বে। তাই পরিবেশ-প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র সংরক্ষণ করে পর্যটক যাতায়ত অব্যাহত রাখতে সুপরিকল্পিত সংস্কার করতে হবে।
ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন অব কক্সবাজার এর প্রধান উপদেষ্টা মুফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে সীক্রুজ অপারেটর ওনার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এর সাধারণত সম্পাদক হোসাইনুল ইসলাম বাহাদুর, টুয়াক এর সাবেক সভাপতি মো: আনোয়ার কামাল, জেলা বিএনপির নেতা রাশেদ মোহাম্মদ আলীসহ পর্যটন ব্যবসায়ীরা বক্তব্য রাখেন।
মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি দেয়া হয়।
সেন্টমার্টিন্স দ্বীপ পরিবেশ ও পর্যটন রক্ষা উন্নয়ন জোটের চেয়ারম্যান শিবলুল আজম কোরেশী, সভাপতি এম এম সাদেক লাবু স্বাক্ষতির স্মারকলিপি প্রদান শেষে কক্সবাজারের অভিজাত একটি হোটেলে সংবাদ করেন তারা।
সেখানে সেন্টমার্টিন বিষয়ে ১৮ দফা দাবি ও প্রস্তাবনা তুলে ধরেন বক্তারা।
সেন্টমার্টিন’স দ্বীপ পরিবেশ ও পর্যটন রক্ষা-উন্নয়ন জোটের অন্র্তভূক্ত সংগঠনের তালিকায় রয়েছে ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন অব কক্সবাজার, হোটেল ওনার্স এসোসিয়েশন অব সেন্টমার্টিন্স, সি ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, রেস্টুরেন্ট ওনার্স এসোসিয়েশন অব সেন্টমার্টিন্স, বাংলাদেশ স্লিপার এসি বাস মালিক সমিতি, সেন্টমার্টিন বাজার দোকান ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি, বোট মালিক সমিতি, স্পিড বোট মালিক সমিতি, ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন অব সেন্টমার্টিন্স, সেন্টমার্টিন মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতি, সেন্টমার্টিন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী, ঢাকাস্থ বিশ্ববিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত সেন্টমার্টিনের শিক্ষার্থী, সেন্টমার্টিন অটো রিক্সা মিনি টমটম ভ্যান মালিক সমবায় সমিতি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, দ্বীপে জেলা পরিষদের ডাক বাংলো, কোস্টগার্ড, নৌ বাহিনী, পুলিশ, আবহাওয়া বিভাগ, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, হাসপাতাল, ইউনিয়ন পরিষদ, টিএন্ডটি ও ডাক বিভাগ, পরিবেশ অধিদপ্তর সহ অনেক প্রতিষ্ঠানের বহুতল ভবন রয়েছে। এটা দ্বীপের জন্য প্রয়োজনীয়। একইভাবে দ্বীপের পর্যটকের জন্য যেসব স্থাপনা রয়েছে তারও প্রয়োজন রয়েছে। ফলে এসব প্রতিষ্ঠান নিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের মামলা প্রত্যাহর করে স্থাপনার ছাড়পত্র প্রদান করতে হবে।
এসব প্রতিষ্ঠান স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ, কাষ্টমস, আয়কর বিভাগ থেকে নিবন্ধন নিয়ে পরিচালনা করা হয় জানিয়ে আরও স্থাপনা নিমার্ণ, পর্যটন সীমিত ও রাত্রিযাপন সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করা, জাহাজ চলাচলের জন্য সময় বৃদ্ধি এবং সাবরাং নতুন করে জেটি নিমার্ণ সহ নানা দাবি জানানো হয়।
এসব দাবিকে পরিবেশ বিরোধী আবদার মন্তব্য করেছেন ইয়ুথ এনভায়রনমেন্ট সোসাইটি (ইয়েস) কক্সবাজার এর প্রধান নির্বাহী ইব্রাহিম খলিল মামুন বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে পর্যটক সীমিতকরণ কিংবা সিষিদ্ধ নিয়ে কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। মুলত দ্বীপে অবৈধভাবে নির্মিত চিহ্নিত কয়েকজন অবৈধ হোটেল মালিক সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন উস্কে দেওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে। শুধু তাইনয়, দ্বীপটি প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা হওয়ার পরও চিহ্নিত হোটেল মালিকরা রাস্তা নির্মাণ ও অবৈধ স্থাপনাগুলোকে পরিবেশ ছাড়পত্র দেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন। এতেই বুঝা যাচ্ছে তাদের আসল উদ্দেশ্য কি?
তিনি বলেন, ১৯৯৯ সালে সেন্টমার্টিন দ্বীপকে সরকার প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। দেশের প্রচলিত আইন অমান্য করে এই ইসিএ এলাকায় ইতিমধ্যে অন্যন্য স্থাপনা ছাড়া শুধু আবাসিক হোটেল নির্মিত হয়েছে দুইশটির উপরে। তাই দ্রুত সময়ে এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করার পাশাপাশি জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানান।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply